You are currently viewing “হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব ওমর (র ) এর জীবনী এবং গুরুত্ব “

“হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব ওমর (র ) এর জীবনী এবং গুরুত্ব “

  • Post author:
  • Post category:blog article
  • Post last modified:November 29, 2024
  • Reading time:2 mins read

ভূমিকা
ইসলামের ইতিহাসে হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) এমন এক ব্যক্তিত্ব, যিনি ন্যায়বিচার, দৃঢ়তা এবং সাহসিকতার জন্য স্মরণীয়। তিনি ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ছিলেন এবং ইসলামের শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য অসামান্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। তার জীবন ও শিক্ষা আজও মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।

buy on amazon

জন্ম ও শৈশব
হজরত ওমর (রা.) ৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে মক্কার কুরাইশ গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল খাত্তাব ইবনু নুফাইল। তিনি তার শৈশবকাল মক্কায় কাটান এবং আরবের তৎকালীন পরিবেশে বেড়ে ওঠেন। তিনি ঘোড়া চালানো, মল্লযুদ্ধ এবং কবিতা রচনায় পারদর্শী ছিলেন।

ইসলাম গ্রহণের পূর্বে

  • মক্কার কুরাইশ বংশের একজন শক্তিশালী ব্যক্তি: ইসলাম গ্রহণের পূর্বে উমর (রাঃ) মক্কার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি শারীরিকভাবে শক্তিশালী, বুদ্ধিমান এবং কুরাইশ সমাজে সম্মানিত ছিলেন।
  • ইসলামের তীব্র বিরোধী: ইসলামের প্রাথমিক পর্যায়ে উমর (রাঃ) ইসলামের তীব্র বিরোধী ছিলেন। তিনি মুসলমানদের উপর অত্যাচার চালাতেন এবং ইসলামের বিস্তারে বাধা দিতেন।

ইসলাম গ্রহণ
প্রথমে হজরত ওমর (রা.) ইসলাম বিরোধী ছিলেন এবং তিনি নবী করিম (সা.)-এর দাওয়াতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন। তবে ৬১৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হন। একদিন তিনি তার বোন ফাতিমা এবং তার স্বামীর ইসলাম গ্রহণের কথা জানতে পারেন। তাদের ঘরে কুরআনের আয়াত শুনে তিনি গভীরভাবে প্রভাবিত হন। পরে তিনি নবী করিম (সা.)-এর কাছে যান এবং ইসলাম গ্রহণ করেন। তার ইসলাম গ্রহণ মুসলিমদের জন্য এক বড় বিজয় ছিল।

খিলাফত ও শাসনকাল
হজরত ওমর (রা.) ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর (রা.)-এর পর দ্বিতীয় খলিফা নির্বাচিত হন। তার শাসনকাল ছিল ১০ বছর, যা ৬৩৪ থেকে ৬৪৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিস্তৃত। এ সময় তিনি ইসলামী সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটান এবং ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেন। তার শাসনকালে পারস্য সাম্রাজ্য এবং বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের বিশাল অঞ্চল ইসলামের অধীনে আসে।

উপলব্ধি ও সংস্কার
১. ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা: তিনি সর্বদা ন্যায়পরায়ণ ছিলেন এবং জনগণের সেবা নিশ্চিত করতেন। তিনি বলতেন, “নদীর তীরে একটি কুকুরও যদি পানির অভাবে মারা যায়, তাহলে তার দায় আমার।”

২. প্রশাসনিক ব্যবস্থা: তিনি প্রশাসনিক কাঠামো উন্নত করেন। রাজস্ব বিভাগ, পুলিশ বিভাগ এবং জনসেবামূলক বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন।

৩. অসহায়দের জন্য সাহায্য: দরিদ্র ও অসহায়দের জন্য খাদ্য, অর্থ এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

৪. নতুন শহর গঠন: কুফা, বসরা এবং ফুস্তাতের মতো শহর প্রতিষ্ঠা করেন, যা ইসলামী সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।

শিক্ষা ও শিক্ষা গ্রহণের গুরুত্ব
হজরত ওমর (রা.)-এর জীবন থেকে আমরা অনেক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি:
১. ন্যায়পরায়ণতা: ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
২. সাহস ও দৃঢ়তা: সঠিক কাজের জন্য দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ।
৩. জ্ঞানচর্চা: জ্ঞান অর্জন এবং তা সমাজের কল্যাণে ব্যবহার করা।
৪. নম্রতা ও দায়িত্ববোধ: ক্ষমতার শীর্ষে থেকেও দায়িত্বশীল ও নম্র থাকা।

উপসংহার
হজরত ওমর (রা.) ইসলামের ইতিহাসে একটি আলোকিত অধ্যায়। তার জীবন ও কর্ম আমাদের কাছে ন্যায়বিচার, সুশাসন এবং সাহসিকতার এক অনন্য উদাহরণ। মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেক সদস্যের উচিত তার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের জীবন আলোকিত করা।